বারান্দায় কিছু একটা হাটছে


সেদিন বিকালের ট্রেনেই আমরা ঢাকায় রওনা দিলাম অরুণ সকাল থেকেই গম্ভীর হয়ে আছে আমার সাথে তেমন একটা কথা বলছে না অরুণকে আমি সবসময়ই হাসিখুশি থাকতে দেখেছি এমন গম্ভীর মুখে তাকে কখনোই দেখিনি আমি শতবার তাকে
জিজ্ঞেস করেছি কিরে কি হয়েছে ? একবারও সে উত্তর দেয়নি
রাত তখন আটটা কি নয়টা অরুণ আর আমি ট্রেনে সামনাসামনি বসে আছি ট্রেনের এ কামরাটা অপেক্ষাকৃত নির্জন ট্রেনের সকল বাতি নিভানো হয়েছে অনেক আগে পাশের জানালাটা খোলা খোলা জনালা দিয়ে হুহু করে বাতাস আসছে চাঁদের আলো খানিকটা এসে পড়েছে অরুণের মুখে আর এতেই আমি তাকে আবছাভাবে দেখছি অদ্ভূত পরিবেশে হঠাৎ অরুণ আমার দিকে ফিরে আচমকা বলল
আচছা,শহিদ, তুই কি আত্নায় বিশ্বাস করিস?
আলো ছায়াময় সেই নির্জন ট্রেনের কামরায় এমন একটা প্রশ্ন শুনে আমি শিউরে উঠলেও বলি
না আমি বিশ্বাস করিনা হঠাৎ এ প্রশ্ন করলি যে
অরুণ কিছুক্ষন চুপ করে কি যেন ভাবল , তারপর বলতে লাগল,
তাহলে শোন , তোকে একটা ঘটনা বলি ,অনেকদিন আগে মধুপুরে দুইজন মানুষ মারা যায় একজনকে মসজিদের পাশের আমগাছটায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় এর একমাস পরেই আরেকজন সেই একই গাছে আত্নহত্যা করে গ্রামাঞ্চলে এইসব ঘটনা নিয়ে খুব তোলপাড় হয় তখন থেকে আমগাছটা সবাই এড়িয়ে চলতে শুরু করে পারতপক্ষে কেউ রাতে ভুলেও আমগাছটার তলা দিয়ে যায়না গতকাল রাতে ফজরের নামাজ পড়তে এই আমগাছটার তলা দিয়েই যাচ্ছিলাম তখনো অন্ধকার কাটেনি চাঁদের আলো হয়তো ছিল কিন্তু আমি যখন যাচ্ছি তখন ঘোর অন্ধকার এমনিতে আমি বেশ সাহসী কিন্তু আমগাছটার তলা দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম , তখন খেয়াল করলাম আমি আসলে ভয় পাচ্ছি , সম্পূর্ণ বিনা কারণে ভয় নির্জন একটা রাস্তা দিয়ে একা গেলে যে কেউ ভয় পেতে পারে কিন্তু আমার ভয়টা সম্পূর্ণ অন্যরকম আমার মনে হল ঠিক আমগাছের গোড়ায় কিছু একটা দাড়িয়ে আছে আমি কিছু দেখিনি , তবুও মনে হল কিছু একটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে তার অস্তিত্ত্ব নেই , শরীর নেই , কিছু নেই , তবুও মনে হইল কিছু একটা আমার পাশে ঠিকই আছে ঠিক তখনি ,অন্ধকারে দেখলাম ঠিক মানুষ বলা যায়না , তবুও অনেকটা মানুষের মত অবয়ব ঠিক আমগাছের গোড়ায় দাড়িয়ে আছে তখন এক জান্তব ভয় আমাকে গ্রাস করল এমন তীব্র ভয় আমি জীবনে কখনো পাইনি তখন আমি খেয়াল করলাম আমার পা কাঁপছে আমি এক চিৎকার দিয়ে মসজিদের বারান্দায় এসে অজ্ঞান হয়ে যাই তারপর কি হয় জানিনা জ্ঞান ফিরলে দেখি মসজিদের বারান্দায় শুয়ে আছি অনেক মানুষ ভীড় করে আছে
একনিশ্বাসে কথাগুলো বলে অরুণ হাপাতে লাগল আমি প্রচন্ড ভয়ে কথা হারিয়ে ফেলেছি সেদিন ট্রেনে অরুণের সাথে আর কোন কথা হয়নি অরুণ সারা পথই কি যেন ভাবছিল রাত তিনটায় যখন ট্রেনটা ঢাকায় আসে তখন ট্রেন থেকে নেমে অরুণ শুধু বলেছিল যাই পরে দেখা হবে
অরুণ থাকে মগবাজারে , তার বাবা মাকে নিয়ে আর আমি থাকি মালিবাগে , একা একটা ছোট ফ্ল্যাট ভাড়া করে বাসায় ফিরে সেদিন আর ভয়ে ঘুমুতে পারিনি বই পড়ে , আলো জ্বালিয়ে রাতটা কোনমতে পার করেছিলাম
কিছুদিন পর প্রচন্ড কাজের চাপে অরুণের গল্প ভুলেই গেছিলাম মধুপুরে যাওয়ার এক সপ্তাহ পরে হঠাৎ অরুণ আমাকে ফোন করে উদভ্রান্তের মত বলল
দোস্ত তুই আমারে বাঁচা
কেন কি হয়েছে ?
আমি বোধহয় পাগল হয়ে যাচ্ছি
কি হয়েছে খুলে বল
সেদিন গভীর রাতে মধুপুর থেকে ফিরে , ট্রেন স্টেশন থেকেই একটা রিকশা নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম রিকশাটা চলতে চলতে যখন একটা অন্ধকার গলিতে ঢুকল , ঠিক তখনি আমার মনে হল কিছু একটা আমার পাশের খালি জায়গায় বসে আছে অনুভূতিটা এতই তীব্র যে আমি আমার পাশে একঝলক তাকিয়েও দেখলাম সেখানে কিছুই নেই আমি বুঝতে পারলাম এটা আমার মনের ভুল ঠিক তখনই আমার মনে একটা অদ্ভুত চিন্তা আসল , ভয়ানক কোনকিছু মধুপুর থেকে আমি আমার সাথে করে নিয়ে আসিনি তো ? মন থেকে যতই চিন্তাটা ফেলে দিতে চাইলাম ততই তা ঝাকিয়ে বসল কিন্তু রিকশা ভাড়া মিটিয়ে যখনই আমাদের বাড়ির গলিটাতে ঢুকলাম তখনই ঐটাকে দেখলাম সামনেই অন্ধকারে দাড়িয়ে আছে তার চোখ নেই ,মুখ নই, পা নেই , তবু মনে হল ওটা চেয়ে আছে আমারই দিকে , তার মুখে ক্রুর হাসি ।। আমি দৌড়ে বাড়ির গেটে যেয়ে দারোয়ানকে ডাকতে থাকি দারোয়ান আমাকে ধরে নিয়ে পৌছে দিয়ে আসে আমাদের ফ্ল্যাটে
এতকথা অরুণ একনাগাড়ে বলে হাপাতে লাগল আমি বললাম
এ সবই তোর কল্পনা চিকিৎসা নিলে মনে হয় ঠিক হয়ে যাবে
প্রথমে আমিও তাই ভেবেছিলাম তিনজন সাইকোলজিস্টের সাথে দেখা করেছি , সব বলেছি, কিন্তু তারা কিছুই করতে পারেনি এখন আমি আমার রুমে তাকে দেখি , দেখি কিছু একটা হাটছে আমার অন্ধকার ঘরে । -ঘর অন্ধকার করে ঘুমালে প্রায়ই দেখি মশারির ওপাশে কিছু একটা দাড়িয়ে আছে তাই এখন বাতি জ্বালিয়ে ঘুমাই
ঠিক আছে তোকে আরো কিছু সাইকিয়াট্রিস্টের ঠিকানা দিই , তুই গিয়ে দেখা করে আয়
ঠিকানা নিয়ে অরুণ ফোন রেখে দেয়
আমার দেয়া ঠিকানাগুলোতে সে গিয়েছিল কিনা জানিনা কিন্তু মাসখানেক পর অরুণ যখন তার রুমের ফ্যানে ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করে তখন খুবই অবাক হই বহু কাজের মধ্যেও তার জানাজায় যাই তার বাবা সেদিন আমাকে জড়িয়ে কাঁদলেন অনেকক্ষন কেন অরুণ আত্নহত্যা করেছে তা কেউ বলতে পারেনি তবে শেষের দিকে অরুণ নাকি গভীর রাতে- কে কে বলে চেচিয়ে উঠত আর একা একা কথা বলত

অরুণের লাশ কবর দিয়ে যখন বাসায় ফিরছি তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে অরুণ আমার অনেক কালের বন্ধু সে আর আমি একসাথে কত জায়গায় ঘুরতে গেছি তার আর আমার বহু স্মৃতি মনে পড়ে কষ্ট হতে লাগল জানিনা কতক্ষণ উদ্দেশ্যবিহীন হেটেছি , জানিনা কেদেছি কিনা , কত কি ভেবেছি তাও জানিনা রাত দশটায় বাড়ির গেটে আসতই দারোয়ান বলল
ভাইজানের কি মন খারাপ ?
না
তাইলে মুখ অমন শুকনা কে ?
আমি ঊত্তর না দিয়ে গেট দিয়ে ঢুকে পড়লাম সিড়ি দিয়ে উঠার সময় পাশের বাসার বিড়ালটাও উঠতে লাগল আমার সাথে আমার ফ্ল্যাট তিনতলায় ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ভিতরে তাকাতেই এক তীব্র ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল আমার রুম তখন পুরো অন্ধকারে ডুবে আছে , পাশের বাড়ি থেকে কিছু আলো এসে পড়েছে আমার রুমে আর এই অস্পষ্ট অদ্ভূত আলোতে আমি স্পষ্ট দেখলাম আমার শোয়ার ঘরের সিলিং ফ্যানটায় ঝুলে আছে অরুণের লাশ ! তীব্র ভয়ে কাপতে কাপতে দৌড়ে নিচে নেমে ,গেটের কাছে এসে হাপাতে লাগলাম দারোয়ান দৌড়ে এসে বলল আরে ভাইজান কি হইছে?
লাশ!
লাশ ? কোথায় ?
আমার রুমে
দারোয়ান পানি দিয়ে বলল
লন পানি খান আর কি হইছে একটু খুইলা কন
রুমের দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি , সামনের রুমে যে ফ্যানটা তাতে রশি পেচিয়ে কেউ একজন ঝুলে আছে
কন কি? চলেন তো আমার সাথে
ফ্ল্যাটে এসে দেখি কিছুই নেই দারোয়ান মৃদু হাসি দিয়ে বললবেহুদাই ভয় পাইছেন
দারোয়ান চলে গেলেও আমি ফ্ল্যাটে ঢুকতে সাহস পেলাম না আধ ঘন্টা পরে যখন ঢুকলাম তখন আগের ঘটনাটা নিজের কাছেই কেমন হাস্যকর লাগছেরাতে আরেকবার গোসল সেরে কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম
গভীর রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল আমার ঘুম এত সহজে ভাঙ্গে না তারমানে কিছু একটা হয়েছে ভালো করে কান পেতে কিছু একটা শুনতে চেষ্টা করলাম তখন হঠাৎ মনে হল কিছু একটা নিশব্দে হাটছে আমার বিছানার চারপাশ দিয়ে মশারির জন্য ভালো করে কিছুই দেখতে পারছি না তবু মনে হল গাঢ় অন্ধকারে আরো গাঢ় কিছু একটা নড়াচড়া করছে তীব্র একটা ভয় আমাকে গ্রাস করল এতো তীব্র ভয় আমি জীবনে পাইনি ঘরে বাতাস নেই , ফ্যান বন্ধ, তবুও আমি স্পষ্ট দেখলাম , আমার মশারিটা হঠাৎ নড়ে উঠল হঠাৎ পায়ের দিকে মশারির দিকে আমার চোখ গেল , আর তীব্র আতঙ্ক নিয়ে দেখলাম , সেখানে একজন মানুষের মুখ দেখা যাচ্ছে , অনেকখানি জিভ বের হয়ে আছে , মুখ রক্তে কালো , চোখটা বের হয়ে আসতে চাচ্ছে বাইরের দিকে জ্ঞান হারানোর পূর্বে টের পেলাম মানুষ পচা তীব্র দুর্গন্ধ আমার রুমজুড়ে ছড়িয়ে গেছে

গভীর রাতে এখনো আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় তাকিয়ে থাকি অন্ধকারে কিছুই দেখি না তবু মনে হয় কিছু একটা তাকিয়ে আছে আমার দিকে!!ভয়ানক কিছু একটা হওয়ার প্রতীক্ষায় আমি দিন গুনছি
বারান্দায় কিছু একটা হাটছে ধীর পদশব্দ শোনা যাচ্ছে , আর কিছু ফিস ফিস শব্দ নাহ! আজ আর লিখতে ইচছে করছে না , জানিনা আর কোনদিন লিখার সুযোগ পাব কিনা
পাঠকদের কমেন্টস
৩ সেদিন বিকালের ট্রেনেই আমরা ঢাকায় রওনা দিলাঅরুণ সকাল থেকেই গম্ভীর হয়ে আছে আমার সাথে তেমন একটা কথা বলছে না অরুণকে আমি সবসময়ই হাসিখুশি থাকতে দেখেছি এমন গম্ভীর মুখে তাকে কখনোই দেখিনি আমি শতবার তাকে জিজ্ঞেস করেছি –কিরে কি হয়েছে ? একবারও সে উত্তর দেয়নি রাত তখন আটটা কি নয়টা অরুণ আর আমি ট্রেনে সামনাসামনি বসে আছি ট্রেনের এ কামরাটা অপেক্ষাকৃত নির্জন ট্রেনের সকল বাতি নিভানো হয়েছে অনেক আগেই পাশের জানালাটা খোলা খোলা জনালা দিয়ে হুহু করে বাতাস আসছে চাঁদের আলো খানিকটা এসে পড়েছে অরুণের মুখে আর এতেই আমি তাকে আবছাভাবে দেখছি এ অদ্ভূত পরিবেশে হঠাৎ অরুণ আমার দিকে ফিরে আচমকা বলল –আচছা,শহিদ, তুই কি আত্নায় বিশ্বাস করিস? আলো ছায়াময় সেই নির্জন ট্রেনের কামরায় এমন একটা প্রশ্ন শুনে আমি শিউরে উঠলেও বলি – না আমি বিশ্বাস করিনা হঠাৎ এ প্রশ্ন করলি যে অরুণ কিছুক্ষন চুপ করে কি যেন ভাবল , তারপর বলতে লাগল, – তাহলে শোন , তোকে একটা ঘটনা বলি ,অনেকদিন আগে মধুপুরে দুইজন মানুষ মারা যায় একজনকে মসজিদের পাশের আমগাছটায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় এর একমাস পরেই আরেকজন সেই একই গাছে আত্নহত্যা করে গ্রামাঞ্চলে এইসব ঘটনা নিয়ে খুব তোলপাড় হয় তখন থেকে আমগাছটা সবাই এড়িয়ে চলতে শুরু করে পারতপক্ষে কেউ রাতে ভুলেও আমগাছটার তলা দিয়ে যায়না গতকাল রাতে ফজরের নামাজ পড়তে এই আমগাছটার তলা দিয়েই যাচ্ছিলাম তখনো অন্ধকার কাটেনি চাঁদের আলো হয়তো ছিল কিন্তু আমি যখন যাচ্ছি তখন ঘোর অন্ধকার এমনিতে আমি বেশ সাহসী কিন্তু আমগাছটার তলা দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম , তখন খেয়াল করলাম আমি আসলে ভয় পাচ্ছি , সম্পূর্ণ বিনা কারণে ভয় নির্জন একটা রাস্তা দিয়ে একা গেলে যে কেউ ভয় পেতে পারে কিন্তু আমার ভয়টা সম্পূর্ণ অন্যরকম আমার মনে হল ঠিক আমগাছের গোড়ায় কিছু একটা দাড়িয়ে আছে আমি কিছু দেখিনি , তবুও মনে হল কিছু একটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে তার অস্তিত্ত্ব নেই , শরীর নেই , কিছু নেই , তবুও মনে হইল কিছু একটা আমার পাশে ঠিকই আছে ঠিক তখনি ,অন্ধকারে দেখলাম ঠিক মানুষ বলা যায়না , তবুও অনেকটা মানুষের মত অবয়ব ঠিক আমগাছের গোড়ায় দাড়িয়ে আছে তখন এক জান্তব ভয় আমাকে গ্রাস করল এমন তীব্র ভয় আমি জীবনে কখনো পাইনি তখন আমি খেয়াল করলাম আমার পা কাঁপছে আমি এক চিৎকার দিয়ে মসজিদের বারান্দায় এসে অজ্ঞান হয়ে যাই তারপর কি হয় জানিনা জ্ঞান ফিরলে দেখি মসজিদের বারান্দায় শুয়ে আছি অনেক মানুষ ভীড় করে আছে একনিশ্বাসে কথাগুলো বলে অরুণ হাপাতে লাগল আমি প্রচন্ড ভয়ে কথা হারিয়ে ফেলেছি সেদিন ট্রেনে অরুণের সাথে আর কোন কথা হয়নি অরুণ সারা পথই কি যেন ভাবছিল রাত তিনটায় যখন ট্রেনটা ঢাকায় আসে তখন ট্রেন থেকে নেমে অরুণ শুধু বলেছিল – যাই পরে দেখা হবে অরুণ থাকে মগবাজারে , তার বাবা মাকে নিয়ে আর আমি থাকি মালিবাগে , একা একটা ছোট ফ্ল্যাট ভাড়া করে বাসায় ফিরে সেদিন আর ভয়ে ঘুমুতে পারিনি বই পড়ে , আলো জ্বালিয়ে রাতটা কোনমতে পার করেছিলাম কিছুদিন পর প্রচন্ড কাজের চাপে অরুণের গল্প ভুলেই গেছিলাম মধুপুরে যাওয়ার এক সপ্তাহ পরে হঠাৎ অরুণ আমাকে ফোন করে উদভ্রান্তের মত বলল – দোস্ত তুই আমারে বাঁচা – কেন কি হয়েছে ? –আমি বোধহয় পাগল হয়ে যাচ্ছি –কি হয়েছে খুলে বল –সেদিন গভীর রাতে মধুপুর থেকে ফিরে , ট্রেন স্টেশন থেকেই একটা রিকশা নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম রিকশাটা চলতে চলতে যখন একটা অন্ধকার গলিতে ঢুকল , ঠিক তখনি আমার মনে হল কিছু একটা আমার পাশের খালি জায়গায় বসে আছে অনুভূতিটা এতই তীব্র যে আমি আমার পাশে একঝলক তাকিয়েও দেখলাম সেখানে কিছুই নেই আমি বুঝতে পারলাম এটা আমার মনের ভুল ঠিক তখনই আমার মনে একটা অদ্ভুত চিন্তা আসল , ভয়ানক কোনকিছু মধুপুর থেকে আমি আমার সাথে করে নিয়ে আসিনি তো ? মন থেকে যতই চিন্তাটা ফেলে দিতে চাইলাম ততই তা ঝাকিয়ে বসল কিন্তু রিকশা ভাড়া মিটিয়ে যখনই আমাদের বাড়ির গলিটাতে ঢুকলাম তখনই ঐটাকে দেখলাম সামনেই অন্ধকারে দাড়িয়ে আছে তার চোখ নেই ,মুখ নই, পা নেই , তবু মনে হল ওটা চেয়ে আছে আমারই দিকে , তার মুখে ক্রুর হাসি ।। আমি দৌড়ে বাড়ির গেটে যেয়ে দারোয়ানকে ডাকতে থাকি দারোয়ান আমাকে ধরে নিয়ে পৌছে দিয়ে আসে আমাদের ফ্ল্যাটে এতকথা অরুণ একনাগাড়ে বলে হাপাতে লাগল আমি বললাম –এ সবই তোর কল্পনা চিকিৎসা নিলে মনে হয় ঠিক হয়ে যাবে –প্রথমে আমিও তাই ভেবেছিলাম তিনজন সাইকোলজিস্টের সাথে দেখা করেছি , সব বলেছি, কিন্তু তারা কিছুই করতে পারেনি এখন আমি আমার রুমে তাকে দেখি , দেখি কিছু একটা হাটছে আমার অন্ধকার ঘরে । -ঘর অন্ধকার করে ঘুমালে প্রায়ই দেখি মশারির ওপাশে কিছু একটা দাড়িয়ে আছে তাই এখন বাতি জ্বালিয়ে ঘুমাই –ঠিক আছে তোকে আরো কিছু সাইকিয়াট্রিস্টের ঠিকানা দিই , তুই গিয়ে দেখা করে আয় ঠিকানা নিয়ে অরুণ ফোন রেখে দেয়আমার দেয়া ঠিকানাগুলোতে সে গিয়েছিল কিনা জানিনা কিন্তু মাসখানেক পর অরুণ যখন তার রুমের ফ্যানে ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করে তখন খুবই অবাক হই বহু কাজের মধ্যেও তার জানাজায় যাই তার বাবা সেদিন আমাকে জড়িয়ে কাঁদলেন অনেকক্ষন কেন অরুণ আত্নহত্যা করেছে তা কেউ বলতে পারেনি তবে শেষের দিকে অরুণ নাকি গভীর রাতে- কে কে বলে চেচিয়ে উঠত আর একা একা কথা বলত ৪ অরুণের লাশ কবর দিয়ে যখন বাসায় ফিরছি তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে অরুণ আমার অনেক কালের বন্ধু সে আর আমি একসাথে কত জায়গায় ঘুরতে গেছি তার আর আমার বহু স্মৃতি মনে পড়ে কষ্ট হতে লাগল জানিনা কতক্ষণ উদ্দেশ্যবিহীন হেটেছি , জানিনা কেদেছি কিনা , কত কি ভেবেছি তাও জানিনা রাত দশটায় বাড়ির গেটে আসতই দারোয়ান বলল –ভাইজানের কি মন খারাপ ? –না –তাইলে মুখ অমন শুকনা কে ? আমি ঊত্তর না দিয়ে গেট দিয়ে ঢুকে পড়লাম সিড়ি দিয়ে উঠার সময় পাশের বাসার বিড়ালটাও উঠতে লাগল আমার সাথে আমার ফ্ল্যাট তিনতলায় ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ভিতরে তাকাতেই এক তীব্র ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল আমার রুম তখন পুরো অন্ধকারে ডুবে আছে , পাশের বাড়ি থেকে কিছু আলো এসে পড়েছে আমার রুমে আর এই অস্পষ্ট অদ্ভূত আলোতে আমি স্পষ্ট দেখলাম আমার শোয়ার ঘরের সিলিং ফ্যানটায় ঝুলে আছে অরুণের লাশ ! তীব্র ভয়ে কাপতে কাপতে দৌড়ে নিচে নেমে ,গেটের কাছে এসে হাপাতে লাগলাম দারোয়ান দৌড়ে এসে বলল — আরে ভাইজান কি হইছে? –লাশ! – লাশ ? কোথায় ? –আমার রুমে দারোয়ান পানি দিয়ে বলল – লন পানি খান আর কি হইছে একটু খুইলা কন –রুমের দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি , সামনের রুমে যে ফ্যানটা তাতে রশি পেচিয়ে কেউ একজন ঝুলে আছে –কন কি? চলেন তো আমার সাথে ফ্ল্যাটে এসে দেখি কিছুই নেই দারোয়ান মৃদু হাসি দিয়ে বলল– বেহুদাই ভয় পাইছেন দারোয়ান চলে গেলেও আমি ফ্ল্যাটে ঢুকতে সাহস পেলাম না আধ ঘন্টা পরে যখন ঢুকলাম তখন আগের ঘটনাটা নিজের কাছেই কেমন হাস্যকর লাগছেরাতে আরেকবার গোসল সেরে কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম গভীর রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল আমার ঘুম এত সহজে ভাঙ্গে না তারমানে কিছু একটা হয়েছে ভালো করে কান পেতে কিছু একটা শুনতে চেষ্টা করলাম তখন হঠাৎ মনে হল কিছু একটা নিশব্দে হাটছে আমার বিছানার চারপাশ দিয়ে মশারির জন্য ভালো করে কিছুই দেখতে পারছি না তবু মনে হল গাঢ় অন্ধকারে আরো গাঢ় কিছু একটা নড়াচড়া করছে তীব্র একটা ভয় আমাকে গ্রাস করল এতো তীব্র ভয় আমি জীবনে পাইনি ঘরে বাতাস নেই , ফ্যান বন্ধ, তবুও আমি স্পষ্ট দেখলাম , আমার মশারিটা হঠাৎ নড়ে উঠল হঠাৎ পায়ের দিকে মশারির দিকে আমার চোখ গেল , আর তীব্র আতঙ্ক নিয়ে দেখলাম , সেখানে একজন মানুষের মুখ দেখা যাচ্ছে , অনেকখানি জিভ বের হয়ে আছে , মুখ রক্তে কালো , চোখটা বের হয়ে আসতে চাচ্ছে বাইরের দিকে জ্ঞান হারানোর পূর্বে টের পেলাম মানুষ পচা তীব্র দুর্গন্ধ আমার রুমজুড়ে ছড়িয়ে গেছে ৫ গভীর রাতে এখনো আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় তাকিয়ে থাকি অন্ধকারে কিছুই দেখি না তবু মনে হয় কিছু একটা তাকিয়ে আছে আমার দিকে!!ভয়ানক কিছু একটা হওয়ার প্রতীক্ষায় আমি দিন গুনছি বারান্দায় কিছু একটা হাটছে ধীর পদশব্দ শোনা যাচ্ছে , আর কিছু ফিস ফিস শব্দ নাহ! আজ আর লিখতে ইচছে করছে না , জানিনা আর কোনদিন লিখার সুযোগ পাব কিনা

প্রফেসর-ভূতনাথ

সেদিন ঢাকাগামী ট্রেন সুবর্ণতে যাচ্ছি ঢাকাট্রেনে চেপে বসে ১০ মিনিট পরে এক বৃদ্ধ বললেন, “Excuse me,এটা কি ২৫ নং সিট?” আমি পেছন ফেরে বেশ কিছু সময় তাঁকে দেখলামতাঁর কথার জবাব না দিয়ে আমি তাঁকে প্রথমেই একটা প্রনাম করে বললাম, “স্যার ভাল আছেন? আমি আপনার সেই প্রতিবেশী,আপনার ছাত্র নীল’’ ‘‘ওরে নীল কতদিন পর;আমায় সিটটা একটু…’’ “হ্যাঁ স্যার আপনি তো এখানেই স্যার’’
আমার স্যার,প্রফেসর ভূতনাথআমার প্রতিবেশী আবার এইচ এস সিতে Chemistry’r প্রফেসরআমার প্রিয় ব্যক্তিবর্গের মধ্যে তিনি একজনআমার জীবনের এক অদ্ভুত আদর্শমানুষের যে Personal matter বলে একটা কিছু থাকে সেটা তাঁর মাঝে খুব একটা বোঝা যায় না
একদিন ভোরে দাঁত মাজতে মাজতে বারান্দায় দেখলাম স্যার চেয়ারে বসে আছেনআমি জিজ্ঞেস করলাম কি স্যার আজ মর্নিং ওয়ার্কে যাননি”? “না,আজ যাই নিআজ শর্মিষ্ঠার জন্মদিনঠিক সে সময়ে সেখানে চা নিয়ে উপস্থিত স্যারের মেয়েআমি বোকার মতো তাকে বলে ফেললাম শুভ জন্মদিন’’স্যার তো রেগেমেগে অস্থির, “ওরে গর্ধব,শর্মিষ্ঠা আমার wife.’’আমি তড়িঘড়ি করে স্যারকে বললাম “sorry sir’’.স্যার কোন কথা না বলে ভেতরে চলে গেলেন
সেদিন কলেজে যাচ্ছিসিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখি স্যার গেইটের বাইরেআমি গেইটের বাইরে যেতেই বলল, “কোথায়,কলেজে নাকি”? “হ্যাঁ স্যারদাঁড়াওকিছুক্ষণ পরে একটা রিকসা ডেকে নিজে উঠে আমাকে উঠালেনএকটু নার্ভাস লাগছিল,
সকালে কি ঘটনাই না ঘটালামকলেজের মোর নিতেই তিনি রিক্সা কে বললেন সোজা চলতেআমি নেমে যেতে চেয়েছিলামকিন্তু তিনি আমায় নামতে মানা করলেনতারপর বললেন, “বুঝলে আজ চিন্তা করলাম ঘর থেকে বের হয়ে যাকে প্রথমে দেখব তাকে নিয়েই দূরে কোথাও ঘুরে আসবআমি তো ভয়ে ঘামছিতিনি আমার অবস্থা দেখে বললেন, “কি ব্যাপার ঘামছ কেন?”আমি একটু আমতা আমতা করে বললাম, “না স্যার একদম ঘামছি নাআমি তো দেখতে পাচ্ছিমুছে নাও,মুছে নাওতুমি কি নার্ভাস হচ্ছো নাকি?নার্ভাস হওয়ার কিছু নেইমনে কর আমি তোমার বন্ধু সূর্যআমিও মোটামুটি স্বাভাবিক হতে চেষ্টা করলামএমন সময় মোবাইলে রিং বেজে উঠলকোন রকম কথা বার্তা সেরে মোবাইল পকেটে রাখতে যাচ্ছি,এমন সময় স্যার আমায় প্রশ্ন করল, “কি প্রেম কর”?আমি বরাবরই আবার নার্ভাস হয়ে পড়লামবললাম, “না স্যারএকদমই না’’ “প্রেম কর নাশুনে অবাক হলামকি কর?”
পড়ি স্যারমানে সারাদিন বই নিয়ে’’হ্যাঁ স্যারকি আশ্চর্যঅবশ্য তোমাদের প্রেম কে প্রেম বলা চলে নাতোমরা প্রেম আর ভালবাসাকে আলাদা করে ফেলেছপ্রেম ছিল আমার আর শর্মিষ্ঠার মধ্যেতোমরা প্রেমের নামে সময় নষ্ট করআমি বলে ফেললাম, “আমি না স্যার’’সেদিন স্যারর সাথে সারাটা দিন ছিলামশুনেছি তাঁর জীবন গল্পসত্যি এভাবে জীবনের হাঁড়িয়ে যাওয়া গল্প কোন এক ছাত্রের সাথে শেয়ার করা,ঐ প্রথম স্যারকে পেলাম
নিজের দায়িত্বে ছিলেন একশ ভাগ অটলএকদিন দুষ্টুমি করে আমার বন্ধু সূর্য আমায় কলেজে যেতে বলল,যদিও সেদিন তেমন কোন important class ছিলনাতবে ভূতনাথ স্যারর ক্লাস ছিলআমি যথারীতি ক্লাসের বাইরে থেকে দেখতে পেলাম ক্লাসে কেউ নেইকিন্তু স্যারের চোখে ধরা পড়ে গেলামতখন তিনি খালি ক্লাসে রোল কল করছিলেনআমিও বাধ্য হয়ে ক্লাসে ঢুকে পরলামআমার রোল এলে আমি প্রেসেন্ট দিয়ে বললাম, “স্যার আর তো কেউ নেইআপনি স্যার সবগুলো এবসেন্ট করে দিনতিনি থামলেন নারোল কল শেষে তিনি বললেন, “দেখ ক্লাসে আসাটা তোমার দায়িত্ব আবার অধিকারতুমি আস্তেও পার নাও পারযদি আস যথা সময়ে আসআজ যদি তুমি রোল কল শেষে ক্লাসে ঢুকতে আমি তোমার প্রেসেন্ট দিতাম নাআর ক্লাসে রোল করাটা আমার দায়িত্বের মধ্যেই পড়েতাই আমি আমার দায়িত্ব পালন করলাম’’কলেজের প্রতিটা ছাত্রের প্রতি ছিল সমান দায়িত্ব,সমান আদর,সমান শাসনযেদিন তাঁর ক্লাসে কোন ছাত্র ঘুমিয়ে পড়ত সেদিন সেই ছাত্রকে বকুনি বা কটূক্তি না করে গল্প করতক্লাস শেষে শুধু এইটুকুই বলত আমার ক্লাসের আগে, “ক্যান্টিন থেকে এক কাপ চা খেয়ে আসবেযদিও একবার যে ধরা পড়েছে সে আর কোনদিন ক্লাসে ঘুমোয় নিতিনি খুব ভাল করেই জানতেন,chemistry খুব বোরিং একটা বিষয় যা বুঝতে হয় কিন্তু পড়তে একটু ক্লান্ত লাগে
স্যার বেশ প্রতিবাদী ছিলেনবাম দলের পক্ষপাতী ছিলেনমনিং ওয়ার্কে তাঁর সাথে কেউই রাজনৈতিক আলাপে জিততে পারত নাআর ক্লাসে যদি গল্প শুরু করে তবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল তাঁর গল্পের বিষয়
যাহোক,সেই প্রফেসর ভূতনাথের সাথে আজ পাশাপাশি বসে ঢাকা যাচ্ছিএখনো সেই আগের মতোই আছেশুধু চশমার পাওয়ারটা বেড়েছেএই অবস্থায় এখনও পড়ছেন বি বা দীঅর্থাৎ তিন বিপ্লবী নেতার গল্প বিনয় বাদল দীনেশআর আমি তাঁর গল্প লিখে চলেছি

পুখুরিয়া এলাকায় অজ্ঞাত এক যুবকের লাশপুখুরিয়া এলাকায় অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ


মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলায় পুখুরিয়া এলাকায় একবার অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার
করে পুলিশসেই লাশটির কোনও নাম পরিচয় পাওয়া না যাওয়ায় তকে বেওয়ারিশ লাশ
হিসেবে দাফন করা হয়পরদিন সকালে স্থানীয় কয়েকজন কবরটির উপরের মাটি সরে
থাকতে দেখে এলাকার পুলিশকে খবর দেয়পুলিশ এসে তাদের লোক নিয়ে কবর খুঁড়ে দেখে
কবরটি ফাঁকা, এবং সেখানে শুধু কাফনের কাপড় পড়ে আছে

এই ঘটনার পর থেকে স্থানীয় মানুষের অনেক গরু ছাগল খুব দ্রুত কোনও কারণ ছাড়াই মারা
যেতে লাগলোএমন অদ্ভুত রোগ কেউ কখনো দেখে নিতাদের গরু বা ছাগলগুলো খোওয়ারে
মরে থাকতো এবং গাঁয়ে কোনও রক্ত থাকতো না
কেউ যেনও রক্ত চুষে নিয়েছে সেগুলোর গা থেকেভয়ে অনেক গৃহস্থ সেই এলাকায় গরু
ছাগলগুলো বিক্রি করে দেয়এলাকার স্থানীয় কৃষক, বাচ্চু মিয়াঁ একবার নিজের খোওয়াড়ে
অদ্ভুত শব্দ পেয়ে উঁকি দেনতখন সন্ধ্যা মাত্র হয়েছেতাই ফাঁকফোকর দিয়ে খোওয়াড়ে
আলো পড়ছে খানিকটাসেই আলোতে তিনি দেখলেন তার একটা গরু মরে পড়ে আছে এবং তার
উপর এক অদ্ভুত মানুষসদৃশ প্রাণী চেপে বসে আছে
সেই প্রাণীটি ঐ গরুর গলায় কামড় দিয়ে ধরে যেনও রক্ত খাচ্ছেভয়ে বাচ্চু মিয়াঁর গলা
দিয়ে আঁতকে উঠার শব্দ বের হয়সাথে সাথে ঐ বস্তুটি বাচ্চু মিয়াঁর দিকে চোখ তুলে
তাকায়খানিকটা অন্ধকারেও সেই বস্তুর চোখ থেকে নীল আলোর মতো বের হচ্ছিলএরপর
তা খুব দ্রুত খোওয়াড়ের পাশে জানালা দিয়ে বের হয়ে পাশের ক্ষেতের মধ্যে ঢুকে পড়ে
বাচ্চু মিয়াঁর ভাষ্যমতে, ঐ বস্তু মানুষের মতই দৌড়চ্ছিলতবে খুব দ্রুতপ্রায় চোখের
পলকে হারিয়ে যায় বস্তুটিঐদিনের পর থেকে ঐ গ্রামে আর কোনও গৃহপালিত পশু মরার
কথা শোনা যায় নি

তাইফুন তালেক


বান্দরবানের বাইশারী নামক এলাকায় নাকি মাসে একদিন এক বৃদ্ধের দেখা পাওয়া যায়।। মারমারা সেই বৃদ্ধের নাম দিয়েছে জাদি লামবা জ্ঞানী বৃদ্ধ” , এই বৃদ্ধ নাকি মারমাদের তাইফুন তালেকনামের এক দেবতাকে পূজা করার ব্যাপারে উৎসাহ দেন।। তাইফুন তালেকমৃত্যুর দেবতা।। বলা হয়ে থাকে, মৃত্যুর দেবতা
কাউকে পছন্দ করলে সে নাকি শতবর্ষজীবী হয়।। অপরদিকে এই দেবতা কারো সর্বনাশ করতে চাইলে কারো নাকি সাধ্য নেই তাকে বাঁচানোর।। তবে দেবতা সরাসরি ঐ মানুষকে শাস্তি না দিয়ে তার পরিবারের কেউ(বিশেষ করে ছোট বাচ্চা থাকলে তাকে) শাস্তি দিয়ে থাকেন।। শাস্তির ধরনটাও অদ্ভুত।। যেই ব্যক্তিকে দেবতা শাস্তি দিবেন তাকে যত সতর্ক অবস্থায় রাখা হোক না কেন সে ঘর থেকে উধাও হয়ে যায়।। তারপর তাকে প্রান্তিক পাহাড়নামক এক পাহাড়ের কাছে পাওয়া যায়।। অবশ্য মানুষটি মৃত থাকে তখন।। বীভৎস ভাবে মাথা থেঁতলে দেয়া হয় কোন পাথরের আঘাতে।। এতকিছুর পরেও জাদি লামকে কেউ কখনো কিছু বলতে পারে নি।। একবার এক লোকের বাচ্চা তথাকথিত মৃত্যুর দেবতার আক্রমণে মারা গেলে সে রাগে হ্মোভেজাদি লামকে জনসম্মুখে প্রচুর মারধর করে।। এমনকি তার গায়ের কাপড় খুলে নিয়ে মারতে থাকে।। জাদি লামঐ দিন খুড়িয়ে খুড়িয়ে ফিরে যায় তার বাসস্থান জঙ্গলের দিকে।। সেই রাতেই ঐ লোকটির (যে জাদি লামকে মারধোর করেছিলো)ঘর থেকে আর্তচিৎকারের শব্দ পায় এলাকার মানুষরা।। তাড়াতাড়ি করে যে যেভাবে পারে আগুন, কুপি নিয়ে ঐ লোকের বাসায় পৌঁছালে দেখা যায় লোকটি ঘরের মেঝেতে মৃত পড়ে আছে।। তার সারা গায়ের চামড়া তুলে নেয়া হয়েছে।। মাটিতে পড়ে আছে একদলা মাংসপিণ্ড।।  লোকটির বউ বিস্ময়ে বোবা হয়ে গেছে।। ঘটনার অনেক পরে একদিন তার বউকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে সে জানায়, বরাবরের মতোই সে এবং তার স্বামী রাতের খাওয়া খেয়ে ঘুমাতে যাচ্ছিলো।। তার স্বামী হুক্কায় আগুন দিয়ে হুক্কা টানছিল।। এমন সময় হঠাত্ ঘটাং করে তাদের ঘরের দরজা খুলে যায়।। প্রচণ্ড বাতাস বইতে থাকে ঘরের মাঝে।। বাতাসের তোরে ঘরের বাতি নিভে যায়।। এরপর লোকটির বউ শুধু শুনতে পায় তার স্বামী চিৎকা রকরছে।। প্রচণ্ড ব্যথায় জন্তু জানোয়ারের মতো খাবি খাওয়ার মতো শব্দ করছে।। বাতাসটা ১মিনিটের মতো ছিল।। তা চলে যাওয়ার পর কুপিতে নিজে নিজেই আগুন ধরে উঠে।।দরজা জানালা সব স্বাভাবিক হয়ে যায়।। বিস্ময়ের সাথে সেই মহিলা দেখে চোখের সামনে স্বামীর চামড়া ছাড়ানো লাশ পরে আছে।। ঘটনাটি আমার এক মারমা বন্ধুর কাছ থেকে শোনা।। সেদিন কথার ছলে সে বলছিলো মারমাদের অঞ্ছলে নাকি এমন অনেক ঘটনাই আছে যার কোন ব্যখ্যা নেই !!

জীন-বন্ধু

প্রথম ঘটনাটা হয় ঘরে, আমি ঘুমিয়ে আছি আমাকে কেউ যেন বলছে তুমি কি কাজ টা ভাল করলা আমি তো তোমার বন্ধু, ঘুম থেকে উঠে কাউকে দেখি না কথাটা আম্মা কে বললাম কিন্তু কেউ কিছু বুঝলাম না তার পর কিছু দিন কেটে যায়আরেক রাতে মনে হল আমাকে কে যেন বলছে তুমি আজ তোমার বিছানায় ঘুমাবে না তোমার বিপদ হবে, কি মনে করে যেন আমি অন্য বিছানায় ঘুমাই সেদিন রাতে আমাদের রান্না ঘরে আগুন লেগে যায় সব চেয়ে ভয়ের কথা হল রান্না ঘরটা আমার রুমের পাশে আর আগুন লেগেছে আমার রুমের পাশেই আমি অবাক হয়ে গেলাম যে রাতে কে আমাকে ঐ কথা বলেছিল আপা কে বললাম আপা বললেন এটা জ্বীন,সে আমার বন্ধু হতে চায় আমি আপাকে বললাম কথাটা আর কাউকে না বলতে আসার সময় আপা আমাকে বললেন তোমার শরীর তো এমনিতে বন্ধ করা কিন্তু তুমি যদি কাউকে আসার সুযোগ দাও তা হলে সে তোমার ক্ষতি করতে পারবে তবে এ থেকে বাঁচার একটা উপায় আছে তুমি যদি তোমার হাতে কোন বন্ধনি রাখ (যেমন ঘড়ি,সুতা আংটি ব্রেসলেট) তা হলে সে তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না যতক্ষণ তোমার হাতে ঐ জিনিস গুলো থাকবে আমি চলে আসলাম, তার কয়েক মাস কোন ঘটনা ঘটে নাই আমরা বাসা বদল করে আরেক এলাকায় চলে আসি আসার এক বছরের মাথায় একদিন আমি কাজে ছিলাম, তখন আমি একা দুপুর ২টা বাজে দেখি একটা মেয়ে পাশের বাসার ছাদের উপর থেকে আমাকে ডাকতেছে মেয়ে টার মুখটা খুব কালো করে বলল তুমি বাসায় চলে যাও যত তারা তারি পার এই বলে মেয়েটা কোথায় যেন চলে গেল আমি কিছু বলতে পারলাম না আমার তখন আরও কিছু ঘটনার মাধ্যমে জানা হয়ে গেছে যে সে আমাকে মিথ্যা বলেনা আমি সাথে সাথে কাজ বন্ধ করে বাসায় চলে আসি আসার পর জানতে পারি আমার বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিকালের দিকে খবর আসে আমার বাবা মারা গেছেন । (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহির রাজিঊন) আপনারা আমার বাবার জন্যে দোয়া করবেন তিনি যেন জান্নাত বাসি হোন
তার ঠিক ১৪দিনের সময় আমার ঐ আপা মারা যান মারা যাওয়ার আগের রাতে আমি আপাকে সপ্নে দেখি কিন্তু আমি বাসায় ছিলাম তার পরও কোন এক অজানা কারনে আমাদের মাটি দিতে যাওয়ার সময় দেরী হয়ে যায় যে জায়গায় মাটি দেওয়া হয় সে জায়গা আমাদের নতুন বাসা থেকে এক ঘন্টার পথ কিন্তু সেই পথ আমরা বিশ মিনিটে কি ভাবে যাই তা আজো আমার কাছে অজানা রয়ে গেছে তার পর আমরা মাটি দিয়ে চলে আসি, আপা মারা যাওয়ার আগে আম্মা কে কিছু কথা বলে যান আমি জানিনা কি ? তার পর থেকে আমাকে একা বিছানায় থাকতে দেওয়া হত আগে আমি আমার বড় ভাই এর সাথে থাকতাম.

জীন


আমি সুমন,
ঘটনাটা সিলেটের লীডিং ইউনির্ভাসিটির একজন প্রফেসর এর কাছ থেকে শুনা তিনি আমাকে যে ভাবে বলেছেন আমি সেভাবেই লিখছি ঘটনাটা সিলেটের হরিপুর নামক জায়গারআমাদের বাসায় একটা জ্বীন এর পরিবার বাস করে ঘটনাটা প্রথম জানা যায়,আমার চাচাতো বোনের বিয়ে ঠিক হওয়ার সময়,আমার বোনের একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল
কিন্তু বিয়ের কথা হচ্ছিল আরেক জনের সাথে সে দিন তাকে দেখতে ছেলে পক্ষ এসেছিলছেলের বাবা যখন কথা বলছিল তখন মেয়ে কে জিগ্যাসা করল যে মেয়ের এই বিয়েতে মত আছে কি না?তখন মেয়েটা কোন কথা বলে নাই তারা মনে করে যে মেয়ের মত আছে এবং তারা মেয়েকে চলে যেতে বলল ঠিক তখনই মেয়েটা পুরুষ মানুষের গলায় বলল যে ঝুমার(মেয়েটার নাম) এই বিয়েতে মত নেই,তোমরা চলে যাও এই বলে মেয়েটা চলে গেললোক গুলো মেয়েটার বিষয়ে নানা রকম বাজে কথা বলতে লাগেতার পরই তারা দেখতে পায় একটা বিরাট বড় সাপ যা কিনা তাদের তাড়া করতেছিল এবং তাদের কে বাহির করে দিলোতারা চলে যাওয়ার পর আমার চাচা একজন ইমাম সাহেব কে নিয়ে আসেন যে কিনা এইসব বিষয়ে কাজ করে থাকেন ও তার কাছে কিছু জ্বীন ছিল তিনি তার জ্বীন কে আদেশ করলেন বিষয়টা কি জানার জন্যেঅনেক্ষণ পর জবাব আসে,এটা কিছু জ্বীনের কাজ তবে জ্বীন টাকে নিয়ে আসা তার পক্ষে সম্ভব নাহয়তো অনুরোধ করলে আসতে পারেতিনি ঐ মেয়েটাকে নিয়ে আসতে বললেনমেয়েটা আসার পর মেয়েটা কে বললেন তুমি কি কিছু জানমেয়েটা না বললতখন ঐ হুজুর জ্বীন টাকে আসার জন্যে অনুরোধ করলেনতখন মেয়েটার গলা বদলে পুরুষ মানুষের গলায় বলল কে আমাকে ডেকেছিল,ইমাম সাহেব সালাম দিলেন ও বললেন আমি ডেকেছি,আপনি কে? সে বলল আমি,(নাম টা মনে নাই)আমরা এখানে থাকি অনেক বছর থেকে আমার পরিবারের সবাই থাকে এখানে এই মেয়েটা আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছে যে এইখানে যেন তার বিয়ে না হয়আমরা তাকে সাহায্য করেছি,আর কিছু নাহুজুর বললেন আপনারা কি এখান থেকে চলে যাবেন সে বলল আমরা কোথায় যাবো আমাদের সবাই এখানে থাকে আমরা তো আর কারো যায়গায় গিয়ে থাকতে পারবো নাএইভাবে অনেক সময় কথা কাটাকাটি হওয়ার পর ঠিক হলো তারা এখানেই থাকবে তবে কারো কোন রকম ক্ষতি করবেনাতারপর হুজুর চলে যান এবংপরেমেয়েটা অঞ্জান হয়ে যায়

ঘটনাটি আমার কাকার মুখ থেকে শোনা।

ঘটনাটি আমার কাকার মুখ থেকে শোনাআমার কাকার গ্রামের বাজারে একটা মুদি দোকান আছেসেখানে হাটের দিন অনেক রাত পর্যন্ত বেচা কেনা হয়কাকা মাঝে মাঝে আসতে আসতে নাকি রাত ১-২ টাও বেজে যেতকাকার দোকানে সেলিম নামের এক কর্মচারী কাজ করতোসে কথা বলতে পারতো নামানে, বোবা ছিলকাকা তাকে খুবই আদর যত্ন করতোসেলিমের তিনকুলে কেউ নেইসে তার দুঃসম্পর্কের এক মামার বাড়িতে থাকতোসেই লোক মারা যাওয়ার পর না খেয়ে ছিলকাকার দয়া হয় নিজের দোকানে তাকে কাজ দেন

সেলিম আমার দাদু বাড়িতেই থাকতোকাকার সাথেই রাতে বাজার থেকে ফিরতকাকা প্রায়ই বলতেন, সেলিম ছেলেটাকে দেখে উনার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়উনি নাকি অনেকদিনই শুনেছেন গভীর রাতে সেলিমের ঘর থেকে কথাবার্তার আওয়াজ পাওয়া যায়(এমনকি কাকিমা নিজেও শুনেছেন)কিন্তু সেলিম নিজে বোবাতার কথা বলার প্রশ্নই আসে না

একরাতে কাকা অনেক দেরি করে বাসায় ফিরছিলেনসেদিন হাটবার ছিল তাই বাজারে লোকজনও ছিল বেশি তাই দোকান বন্ধ করতে করতে সময়ও লাগে বেশিকাকা বাড়ির পথ ধরেন রাত ১টার কিছু পরেসাথে সেলিমআগামীকাল বাসায় মেহমান আসার কথা তাই কাকা হাত থেকে বড়সড় ৪টা মুরগি কিনে রেখেছিলেনসেলিমের হাতে মুরগিগুলোকাকার হাতে পান-সুপারি
চাঁদের আলোয় চারপাশ ভালোই ঝলমল করছিলোকাকা আনমনেই সেলিমের সাথে কথা বলছিলেনদোকানে আজ কেমন বেচাকেনা হল সে সব নিয়েসেলিম মাথা নিচু করে শুনছে আর পাশাপাশি হাঁটছেবাজার থেকে প্রায় ২০০-৩০০ হাত আসার পর রাস্তাটা বামে মোড় নিয়েছে অনেকটুকুকাকা কথা বলতে বলতে আনমনেই এগুচ্ছিলেন, হটাত দেখতে পেলেন সামনে গাছের আড়ালে কি যেনও নড়ে উঠলো

এখানে বলে রাখা দরকার, আকাশে বিরাট চাঁদ ছিল, এবং এমনকি রাস্তার সাদাবালিগুলোতে চাঁদের আলো পরে চিকচিক করছিলোপরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল চারপাশকাকা পাত্তা না দিয়ে এগুতে লাগলেনকিন্তু সেলিম থমকে দাঁড়ালোচোখ মুখ কুঁচকে কি যেনও দেখার চেষ্টা করলোনাক দিয়ে ছোক ছোক করে কিসের যেনও গন্ধ নেয়ার চেষ্টা করলোকাকা সেলিমের মধ্যে এমন ভাব আগে দেখেননি কখনোতিনি একটু বিরক্ত হলেনতাড়া লাগালেন জলদি যাওয়ার জন্যকাকা পা বাড়ালেও সেলিম দাঁড়িয়ে রইলোকাকা আবার পিছনে ঘুরে তাড়া লাগালে সে দৌড়ে এসে কাকার হাত ধরে জোর করে টেনে পিছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়কাকা বিরক্ত হয়ে হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইলেনকিন্তু সেলিমের গায়ে যেনও অসুরের শক্তিসে কাকাকে প্রায় টেনে নিয়ে চলতে লাগলো বাজারের দিকেএইবার কাকা স্পষ্ট শুনলেন পেছন থেকে কে যেনও উনার এবং সেলিমের নাম ধরে জোরে চিৎকার করলোআওয়াজটা তিনবার শোনা গেলোঅপার্থিব সেই আওয়াজ যেনও কাকার কানটা তালা লাগিয়ে দিলো বিমুরের মতো চেয়ে রইলেন রাস্তার দিকেকিভাবে যেনও উনার মনে এই শব্দগুলো আঘাত করলোএ কোনও মানুষের আওয়াজ হতে পারে নাহতে পারে না কোনও পশুর আওয়াজতাহলে? তাহলে, যা তিনি জীবনে বিশ্বাস করেননি, তাই কি হতে যাচ্ছে? কি ভূত প্রেত কিছুর পাল্লায় পড়লেন তিনি

এদিকে সেলিম প্রায় বগলদাবা করে উনাকে দৌড়ে নিয়ে যেতে লাগলো বাজারের দিকেসেলিমের হাত থেকে মুরগিগুলো পড়ে গিয়েছিলোকাকা শেষবার যখন একবার পিছনে ফিরলেন তখন দেখলেন সেই মুরগিগুলো যেনও অদৃশ্য কোনও হাতের ছোঁওয়ায় সেই মোড়ের দিকে যেতে লাগলো
সেইরাত কাকারা বাজারেই কাটিয়ে দিলেনসকালে ফেরার পথে আরো কিছু লোক নিয়ে উনারা দেখতে চললেন মোড়ের সেখানে আসলে কি হয়েছেউনারা যেই মোড়টার কাছাকাছি পৌঁছলেন তখন দেখলেন সেখানে রাস্তার উপর একটা বর্গের মতো আকৃতি বানিয়ে ৪টা মুরগির মাথা সাজানোআর কিছুটা দূরে সেই মাথা ছাড়া দেহগুলো পড়ে আছে

এই ঘটনা কাকার সাথে উপস্থিত বাকি সবাইও দেখে বাসায় ফেরার পর কাকা এবং সেলিম দুজনই অসুস্থ হয়ে পড়েসেলিমের প্রায় ১৫ দিন জ্বর থাকে